নিজস্ব প্রতিনিধি,বর্ধমানঃ আবাস যোজনা তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ায় এবার প্রধান ও আশাকর্মীদের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়লো পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে।রবিবার সকালে ভাতারের ওড়গ্রাম বাসস্যাণ্ডের প্রতীক্ষালয় সহ বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার চোখে পড়ে স্থানীয়দের। সাদা কাগজে কালো কালি দিয়ে লেখা পোস্টারে প্রধান ও আশাকর্মীদের কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। লেখা আছে – ‘আবাস প্লাস যোজনায় ১ ও ২ নম্বর লিস্টে নাম থাকা স্বত্বেও নাম বাদ দেওয়া হল কেন। সাহেবগঞ্জ ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও আশাকর্মীদের জবাব চাই’। স্থানীয়দের একাংশ পোস্টারকে সমর্থন জানিয়ে তারা অভিযোগ করেন, যারা সত্যিকারের গরীব মানুষ,মাটির বাড়িতে বসবাস করেন, তাদের আবাস যোজনায় তালিকায় নাম নেই। ওড়গ্রামের পাঠান পাড়ার বাসিন্দা সেখ আবুতোরাব বলেন,আমি প্রতিবন্ধী মানুষ। আমার নাম ছিল আবাস যোজনায় তালিকায়। কিন্তু এখন জানতে পারছি আমার নাম বাদ গেছে। কি করে আমার নাম বাদ গেল সেই নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। একই অভিযোগ সেখ মুক্তার আলির। তিনি বলেন,ঠিক মত সার্ভে না করেই অনেক গরীব মানুষের নাম আবাস যোজনা তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত দাবীদার যারা তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাই এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ হয়েছে, পোস্টার পড়েছে। পাঠান পাড়ার বাসিন্দা নূর নেশা বিবির অভিযোগ, তার মাটির বাড়ি। ভাড়া নড়বড়ে ঘরে বাস করছি। অথচ তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের আরো অভিযোগ বিডিও অফিসে রাতের অন্ধকারে নাম বাদ দেওয়া ও তোলা হচ্ছে। এমন অনেক বাড়ি আছে সেখানে কোন আশাকর্মী সার্ভে করতে যায় নি। অথচ নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও প্রধান বিনয় কৃষ্ণ ঘোষ দাবী করেন,আবাস যোজনার তালিকা নিয়ে ব্লক লেভেলে সার্ভে করেছেন আশাকর্মী ও আইসিডিএস কর্মীরা। এখানে প্রধানের কোন ভূমিকা নেই। সার্ভে করার পর দেখা যায় দ্বিতীয় তালিকায় অনেক উপভোক্তার নাম বাদ গেছে। সেখানে আমরা বিডিও অফিসে গিয়ে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করি। যদি কারো নাম বাদ যায় তাহলে সেটা দেখতে হবে। তবে এক্ষেত্রে প্রধানের কোন হাত নেই। সবটাই সার্ভের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি হয়েছে। পোস্টার পড়া নিয়ে প্রধান দলের গোষ্ঠী কোন্দলকেই দায়ী করেন। তিনি বলেন,রাজ্যের সব জায়গাতেই দলের গোষ্ঠী আছে। এখানেও গোষ্ঠী আছে। তারাই পোস্টার দিয়েছে। আমি উচ্চ নেতৃত্বকে জানাবো। পোস্টার পড়া নিয়ে ভাতার ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অরুণ কুমার বিশ্বাস বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। যদি কোন যোগ্য উপভোক্তার নাম বাদ যায় তাহলে তার নাম তোলা হবে। স্থানীয় সিপিএম নেতা সুধাকর মালিক বলেন,এই পোস্টার তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দলের ফল। তার অভিযোগ, আবাস যোজনার তালিকা সার্ভে করার মত পরিস্থিতি নেই। আশাকর্মী ও আইসিডিএস কর্মীরা দুর্বল। সুতরাং তারা শাসকদলের নেতাদের ভয় খাচ্ছেন। তারা সঠিক সার্ভে করতে পারেন নি। অন্যদিকে জেলা বিজেপি সভাপতি অভিজিৎ তা বলেন,অনেক গরীব মানুষের নাম বাড়ির তালিকা থেকে বাদ গেছে। আমরা বিডিওকে জানাবো। প্রয়োজনে ঘেরাও করবো বিডিওকে। তবে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, অভিযোগ জানানোর তো জায়গা আছে। কারো নাম আবাস যোজনা তালিকা থেকে বাদ গেলে তিনি বিডিও অফিসে জানান। আর বিরোধীদের কাজ নেই। ওরা তো বিরোধিতা করার জন্যই আছে।