নিজস্ব প্রতিনিধি,বর্ধমানঃ বর্ধমানের গোদার মাঠে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে এসে কেন্দ্রীয় সরকারকে কার্যত তুলোধোনা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এদিন পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা মিলে এই সভাটি হয়। এখানে দুই জেলার বাসিন্দারা ছাড়াও বড় সংখ্যায় ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আসা হয়েছিল। সরকারী অনুষ্ঠান হলেও এদিন মুখ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে আগোগোড়া তীব্রভাষায় নানাক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “ সেন্ট্রাল টিম পাঠাচ্ছো। কে কী খাবে, কে কী পড়বে তা দেখছো। ক্ষমতা থাকলে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে টিম পাঠাও। আমাদের ৭০০০ কোটি টাকা প্রাপ্য। তা দিচ্ছে না। যদিও ৪০ লাখ জব কার্ড ধারীকে রাজ্য সরকার টাকা দিয়েছে”। তিনি আরও বলেন,দাঙ্গা ছাড়া ওদের রাজ্যগুলোয় কোনো কাজ হয় না। আমাকে যতই গালাগাল দাও, গরিবের কথা বলে যাবো। ভবিষ্যতে রেশন বন্ধ করে দিতে চায় কেন্দ্র। গ্যাসের দাম মাত্র চার টাকা কমিয়েছে। নতুন কাঠামোয় আড়াই লাখ টাকা কেটে নিয়ে দু লাখ টাকা ছাড় দিয়েছে। এরা বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে ব্যাংক বীমা সব তুলে দেবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে আঙুল তোলেন। এদিন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়েও স্পষ্ট ধারালো বক্তব্য রাখেন মমতা। তিনি বলেন, “আদালতে গিয়ে চাকরি আটকাচ্ছো। যাতে বাংলায় চাকরি না হয়। আমি আদালতকে মানি,এখানে চাকরি হবে আইন মেনেই চাকরি হবে”। সভা থেকে মমতা বলেন, হতাশ হবেন না এখানে দেড় কোটি কাজ বেড়েছে। দেউচা পাচামি হলেই কয়েক লক্ষ চাকরি হবে। ওরা বলছে গরিবের একটা স্কুটি থাকলে সে বাড়ি পাবে না। একটা স্কুটি থাকতেই পারে। এদিন সরকারী মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষনা করেন, ১০ লক্ষ সাইকেল দেওয়া হবে। যারা দ্বাদশে উঠবে তারা সবাই স্মার্টফোন পাবে। ১০ লক্ষ টাকা করে স্মার্টকার্ড পাবে ছাত্রছাত্রীরা। কারো কাছে হাত পাতার দরকার নেই। বাইরেও যেতে হবে না। এদিনের এই সভা থেকেই দুর্গাপুরে রিজিওনাল ফরেন্সিক ল্যাব উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে এদিন দু লাখ ত্রিশ হাজার মানুষকে বিভিন্ন সরকারী প্রকল্পের পরিষেবা দেওয়া হয়। ৩৮ হাজার লক্ষীর ভান্ডার, ৩০ হাজার সাইকেল ও ৫২ হাজার কৃষকবন্ধুর চেক দেওয়া হয়। একইসাথে দুই জেলার একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধনও করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।