নিজস্ব প্রতিনিধি,বাঁকুড়াঃ মালদার পর পুরুলিয়া। একের পর এক জেলার স্কুলের পাঁচিল ধসে মৃত্যু হয়েছে পড়ুয়াদের। তবে শুধু মালদা বা পুরুলিয়াতেই নয় বাঁকুড়ার প্রাথমিক স্কুলগুলির ভবনেরও দশা এমনই যে, যে কোনোদিন ঘটতে পারে বড়সড় দুর্ঘটনা। স্কুল ভবনের বেহাল দশার কারণে আতঙ্কে ভূগছেন শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে পড়ুয়া ও অভিভাবকরা। জেলা বিদ্যালয় সংসদ অবশ্য তহবিল নেই বলেই দায় এড়িয়েছে।বাঁকুড়া জেলায় সরকার পোষিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার পাঁচশ ছাপ্পান্ন। এই স্কুলগুলিতে পঠন পাঠন করে দু লাখ পঞ্চান্ন হাজারের বেশি ছাত্র ছাত্রী। জেলার বেশিরভাগ স্কুলেরই বয়স তিরিশ থেকে চল্লিশ বছর। এই স্কুলগুলির মধ্যে কিছু স্কুলে নতুন ভবন তৈরি হলেও বেশিরভাগ স্কুলই চলে পুরানো ভবনে। নতুন ভবন পাওয়া স্কুলগুলির ক্ষেত্রেও পড়ুয়ার চাপ থাকায় ব্যবহার করতে হয় স্কুলের পুরানো ভবনকে। বহু ক্ষেত্রে পুরানো ভবনের অবস্থা বেশ বেহাল। বাঁকুড়া শহরের বেলগড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় বা গোপীনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেহারা সামগ্রিক ভাবে জেলার সরকার পোষিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির বেহাল দশাকেই তুলে ধরে। বাঁকুড়া শহরে প্রশাসনের নাকের ডগায় থাকা দুটি বিদ্যালয়ের ভবনেই দেওয়াল ও ছাদ জুড়ে মস্ত বড় বড় ফাটল। সেই ফাটল দিয়ে বর্ষায় যেমন ক্লাসরুমে চুইয়ে পড়ে বৃষ্টির জল তেমনই মাঝেমধ্যে ছাদের চাঙড় খসে পড়ে। মালদা ও পুরুলিয়া জেলায় পরপর দুটি বিদ্যালয়ে দেওয়াল ভেঙ্গে পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনার পর স্বাভাবিক ভাবেই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে পড়ুয়া ও অভিভাবকরা আতঙ্কিত। শিক্ষক শিক্ষিকাদের দাবী বারবার স্কুল ভবনের বেহাল দশার কথা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদকে জানানো হলেও লাভের লাভ কিছুই হয়নি। বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের দাবী জেলার ৪৫টি সার্কেলের মোট সাড়ে তিনশো বিদ্যালয়ের ভবন সংস্কার আশু প্রয়োজন। তার তালিকাও তৈরি হয়ে রয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের তহবিল না থাকায় সেই স্কুলগুলি সংস্কার করার কাজ করা যাচ্ছে না। স্কুলগুলির ভবন সংস্কারের জন্য তহবিলের দাবীতে জেলা শাসকের কাছে আবেদন জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান।