দখলদারদের দৌরাত্ম্য রুখতে পরিত্যক্ত আবাসন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত  ডিপিএলের

0
88

বিশেষ প্রতিনিধি,দুর্গাপুরঃ দখলদারদের দৌরাত্ম্য রুখতে পরিত্যক্ত আবাসন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল ডিপিএল কর্তৃপক্ষ। এর আগে কিছু পরিত্যক্ত আবাসন ভেঙে দেওয়া হয়। ফের শনিবার সকাল থেকে ডিপিএল টাউনশিপের এ-জোন এলাকায় পরিত্যক্ত আবাসন মেশিন দিয়ে আবাসন ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। ডিপিএলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র বলেন, ‘এ-জোন অঞ্চলে পরিত্যক্ত আবাসনগুলিতে যে কর্মীরা বাস করতেন তাদের নোটিশ দিয়ে টাউনশিপের বি-জোন এলাকার আবাসনে স্থানান্তর করার কথা বলা হয়েছে। পরিত্যক্ত আবাসনের তালা ভেঙে বহিরাগতরা বসবাস করছে। এইসব দখলদাররা যথেচ্ছ ভাবে বিদ্যুৎ ও জল ব্যবহার করছে। ফলে ডিপিএলের লোকসান হচ্ছে। তাই পরিত্যক্ত আবাসন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ ডিপিএল টাউনশিপে পরিত্যক্ত আবাসন দখল করে স্থানীয় কিছু যুবক ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফাঁকা আবাসন দখল করে মোটা টাকার বিনিময়ে বহিরাগতদের থাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে ওই যুবকরা। কারও কাছে ৫০ হাজার টাকা আবার কারও কাছে ৬০ হাজার টাকা। আবার কখনও প্রতি মাসে ভাড়ার বিনিময়ে বহিরাগতদের থাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে ওই যুবকরা। সম্প্রতি পুরসভার এক আধিকারিক আবাসন ছেড়ে নিজস্ব বাড়িতে চলে গেছেন। সেই আবাসনটিও দখল হয়ে গেছে। ডিপিএল টাউনশিপের এ-জোন অঞ্চলে শিরিশতলা, খেজুরতলা, ডুমুরতলা পোষ্ট অফিস, কো-অপারেটিভ এই সব এলাকার আসপাশে একাধিক আবাসন দখল করে বহিরাগতরা বাস করছে। বি-জোন অঞ্চলে গোলপার্ক ও চৌরঙ্গী এলাকা সংলগ্ন একাধিক আবাসন দখল হয়েছে। এছাড়া ইএন ও  ডিএন টাইপের আবাসনও দখল হয়েছে। সি-জোন অঞ্চলে এলবি টাইপ ও জিএন টাইপের আবাসন দখল হয়েছে। এছাড়া ব্যারাকের অধিকাংশ ঘর দখল হয়েছে। ডিপিএল কর্মী যারা টাউনশিপের স্থায়ী বাসিন্দা তাদের কথায় যে বহিরাগতরা আবাসন দখল করে বাস করছে তারা কোথা থেকে আসছে কি কাজ করে তা কেউ জানে না। এমনকি পুলিশের কাছেও কোনও তথ্য নেই। ফলে এলাকায় অসামাজিক কাজকর্ম বেড়ে চলেছে। কোথাও জুয়ার আসর বসছে আবার কোথাও দেহ ব্যবসার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টাউনশিপের এক স্থায়ী বাসিন্দা বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে নির্দিষ্ট কয়েকটি আবাসনে দামি গাড়ি ও মহিলা আসছে। ভোর হতেই এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। মদ ও জুয়ার আসর তো আছেই। আমরা যারা স্থায়ী বাসিন্দা বহিরাগতদের দৌরাত্ম্যে আতঙ্কে আছি।’ ডিপিএল টাউনশিপের একটা অংশ পুরসভার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন। ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শশাঙ্কশেখর মন্ডল বলেন, ‘ডিপিএল টাউনশিপের কিছু জায়গায় ক্রমশ অসামাজিক কাজকর্ম বেড়ে চলেছে। শুধু আবাসন নয়, ক্ষুদিরাম কলোনিতে ডিপিএলের জমি দখল করে বসতি গড়ে উঠছে। সেখানে বাংলাদেশ, উত্তর ২৪ পরগনা থেকে লোক এসে বাস করছে। ডিপিএল ম্যানেজমেন্টকে তিনবার চিঠি দিয়ে বিষয়টা জানিয়েছি।’ ডিপিএলের শ্রমিক নেতা উমাপদ দাস বলেন, ‘ডিপিএলের সাড়ে তিন হাজার আবাসনের মধ্যে প্রায় এক হাজার আবাসন দখল হয়ে গেছে। কিছু আবাসনে অসামাজিক কাজ কর্ম হচ্ছে এটা ঠিক। সেই জন্য সমস্ত পরিত্যক্ত আবাসন ভেঙে দিয়ে প্রায় ২২ একর জমি বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই টাকায় ডিপিএলের পুনরুজ্জীবীত করা সম্ভব হবে।’

LEAVE A REPLY