নিজস্ব প্রতিনিধি,বাঁকুড়াঃ হাতির দলের উপর নজরদারি চালাতে গিয়ে এবার এলাকার মানুষের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল বন কর্তাদের। গতকাল বিকালে বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের সংগ্রামপুর বীটের ঝরিয়া ও বাগাবাড়ি এলাকায় বন দফতরের কর্তারা হাতির গতিবিধি দেখতে গেলে তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষ। হাতির দলের হাত থেকে ফসল ও সম্পত্তি হানী রুখতে বন দফতরের কোনোরকম সহযোগিতা মিলছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। দিন ১৫ আগে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে দফায় দফায় হাতির দল এসে উপস্থিৎ হয় বাঁকুড়া জেলায়। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে দ্বারকেশ্বর নদ পেরিয়ে সোনামুখী, বেলিয়াতোড় হয়ে হাতির দলটি হাজির হয় বড়জোড়া রেঞ্জে। বর্তমানে বড়জোড়া রেঞ্জের উত্তর সরাগড়ার জঙ্গলে ৩৬টি, দক্ষিন সরাগড়ার জঙ্গলে ৫টি, বেলিয়াতোড় রেঞ্জের রসিকনগরের জঙ্গলে ১টি, সোনামুখী রেঞ্জের করঞ্চমনি খয়রাশোলের জঙ্গলে ১টি ও ভূলার জঙ্গলে ১টি মিলিয়ে বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগে মোট ৪৪টি হাতি রয়েছে। রাতের অন্ধকার নামলেই হাতির দল জঙ্গল ছেড়ে নেমে আসছে ফসলের জমিতে। এর ফলে বিঘের পর বিঘে জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে এলাকায়। হাতির দলের এই গতিবিধি দেখতে গতকাল বিকালে বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের এ ডি এফ ও দুর্গাকান্তি ঝাঁর নেতৃত্বে বন দফতরের আধিকারিকরা সংগ্রামপুর বীটের ঝরিয়া ও বাগাবাড়ি এলাকায় গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের ঘেরাও করে প্রবল বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। স্থানীয়দের দাবী দিনের পর দিন গ্রাম, লাগোয়া জঙ্গলে হাতির দল থাকায় ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে আতঙ্ক। দিন দিন হাতির হানায় ফসল নষ্টের পরিমান বৃদ্ধি পেলেও বন দফতর হাতিগুলিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। হাতির হানায় সম্পত্তি হানি ঠেকাতে সময়মতো দেখা মিলছে বন কর্মীদের। হাতি তাড়ানোর জন্য গ্রামবাসীদের তেল ও হুলা সরবরাহ করার ক্ষেত্রেও বন দফতর সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। ক্ষয়ক্ষতির কথা কার্যত স্বীকার করে নিলেও বনদফতরের দাবী হাতির দলটিকে ওই এলাকায় বেশিদিন রাখা হবে না। দ্রুত অন্যত্র সরানো হবে। কিন্তু এলাকার মানুষের সহযোগিতা না পেলে সেক্ষেত্রে সমস্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। হাতির হানায় সম্পত্তি ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বন দফতর কড়া নজরদারি চালাচ্ছে বলেও জানিয়েছে বন দফতর।