পুরুলিয়ার নাক কাটা কালী জাগ্রত, ভক্তের সমাগম থাকে বছর ভর  

0
115

সাথী প্রামানিক, পুরুলিয়াঃ পুরুলিয়ার নাক কাটা কালী মন্দিরে বছর ভর ভক্তের সমাগম হয়। ফি বছরের মতো এবারও বিশেষ দিনটিতে জাগ্রত এই মাতৃ আরাধনায় সামিল হবেন পুরুলিয়া শহর ছাড়িয়ে দূর দূরান্তের ভক্তরা।মন্দির আঁকড়ে থেকে অশ্বথ গাছ আরও বেশি দৈব ক্ষেত্র করে তুলেছে এলাকাটিকে।বেশ কয়েক দশক আগে পর্যন্ত ডাকাতরা চুরি-অপকর্ম করতে যাওয়ার আগে তাদের আরাধ্য দেবতা কালীর পুজো করে আশীষ নিত। অথচ, ডাকাতি করতে গিয়ে বিপদে ফেলে দেওয়ার জন্য ক্রোধে সেই কালীরই নাক কেটে পালিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীর দল। জনমুখে প্রচারিত হয়েছে এমন ঘটনা। এমনই এক কালী পূজিতা হচ্ছেন পুরুলিয়া শহরের চিড়া বাড়ি এলাকায়। কয়েক’শ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই পুজোয় এক মাত্রা এনে দিয়েছে পুরুলিয়ায়। কথিত আছে, কয়েক’শ বছর আগে পুরুলিয়া শহরের নির্জন এলাকা চিড়া বাড়িতে ধান চাষ হত ব্যাপকভাবে। ওই এলাকায় রাত্রে সেই ধান চুরি করে কেটে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায় এক দল দুষ্কৃতি। ধান নিয়ে চম্পট দেওয়ার আগেই দুষ্কৃতিদের পথ আটকে দেন বালিকা রুপী মা কালী। চিৎকার করে দূরের বাসিন্দাদের সজাগ করে চুরির কথা জানিয়ে দেন তিনি। এর পরই অদৃশ্য হয়ে যান তিনি। বালিকা রুপী মা কালীর এই কাজে ক্ষুব্ধ হয় দুষ্কৃতিদের দল। তাঁকে না পেয়ে ক্রোধে পাথরের মূর্তির নাক কেটে পালিয়ে যায় তারা। লোক মুখে জানা যায় ওই দুষ্কৃতীরা বেশি দিন বাঁচতে পারে নি। যদিও বাসিন্দারা এসে সেই মূর্তি দেখতে পান। সেই বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য ওই বিগ্রহকে ঘিরে একটি মন্দির তৈরি করে ধূমধামের সঙ্গে আরাধনা করে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুরোহিতদের কথায় বিগ্রহের নাক কেটে গেলেও এর অঙ্গহানি হয় নি। তা ছাড়া ওই ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর প্রাচীন এই জৈন বিগ্রহটি ঘিরে স্থানীয় মানুষের শ্রদ্ধা ও ভক্তি বেড়েছে। প্রাচীন এই বিগ্রহটি দেখলেই বোঝা যায় এর প্রাচীনত্ব। শুধু তাই নয়, প্রাচীন বিগ্রহটি ঘিরে যে মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল তাও বেশ পুরানো। নাক কাটা কালী তেমনই এক দেবী যিনি স্থানীয়দের সারা বছরের ফসল রক্ষা করার জন্য নিজের এক অঙ্গ উৎসর্গ করেছিলেন। আর যাই হোক, এই ঘটনা মানুষের বিশ্বাস যোগ্যতার মাপকাঠিকে শিখরে পৌঁছে  দিয়েছে- একথা বলা যেতেই পারে।

LEAVE A REPLY