অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে টোটোয় বর্ধমান মেডিকেলে যাওয়ার পথেই মৃত্যু দিন মজুর মহিলার

0
64

নিজস্ব প্রতিনিধি,বর্ধমানঃ অসুস্থ স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য  পূর্ব বর্ধমানের ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন স্বামী।প্রাথমিক চিকিৎসা করে তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালে মেলেনি অ্যাম্বুলেন্স। গরিব জনমজুর পরিবারের গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য হয়নি। তাই ভাতার হাসপাতাল থেকে টোটোয় চাপিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে ট্রেন ধরার জন্য যান স্বামী। ভাতার রেলস্টেশনে পৌঁছানো মাত্রই মৃত্যু হয় মহিলার। বৃহস্পতিবার এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। স্ত্রীর দেহ আগলে রেলস্টেশনের গাছের তলায় বসে বসে কাঁদছিলেন স্বামী। তারপর স্থানীয় কয়েকজন মিলে চাঁদা তুলে গাড়ি ভাড়া করে দেহটি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ভাতার হাসপাতালে পৌঁছানোর পরেও ওই রোগীর জন্য অ্যাম্বুলেন্স না জোটায় প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। মৃত মহিলার নাম মেনকা কোঁরা(৫০)। বর্ধমানের পারবীরহাটা এলাকায় তাদের বাড়ি। মৃতার স্বামী অসিত কোঁরা জানান, তারা স্বামী স্ত্রী দু’জনেই জনমজুরি করেন। গত সোমবার স্বামী স্ত্রী ও আরও কয়েকজন মিলে ভাতারের কাঁচগড়িয়া গ্রামে এক কৃষকের কাছে বোরোধান কাটার কাজে যান। অসিত কোঁরা বলেন,” আমার স্ত্রী দুদিন ধরেই রোদে গরমের কারণে অসুস্থ ছিল। এদিন ভাতার হাসপাতালে দেখাতে নিয়ে যাই। দু’বোতল স্যালাইন দিল। তারপর বর্ধমানে নিয়ে যেতে বলে। আমি অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলাম। হাসপাতালে বললো অ্যাম্বুলেন্স নেই। গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু কাছে টাকা ছিল না। তাই ট্রেন ধরার জন্য টোটোয় করে স্ত্রীকে নিয়ে আসি। ভাতার স্টেশনে এসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করার সময় স্ত্রী মারা গেল।”  অসিত কোঁরা ভাতার রেলস্টেশন চত্বরে এটি গাছের তলায় স্ত্রীর দেহটি রেখে কাঁদছিলেন। চোখে পড়ে স্থানীয় রফিকুল ইসলাম, শেখ আবসার এমন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার। তারা ঘটনার কথা শুনে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা তুলে গাড়িভাড়া করে দেন। তারপর অসিতবাবু তার স্ত্রীর দেহটি নিয়ে বর্ধমানে ফেরেন। যদিও পুলিশ সূত্রে জানা যায় এনিয়ে থানায় কিছু জানানো হয়নি। চিকিৎসকরা প্রেশক্রিপনে উল্লেখ করেন ওই রোগী তিন চারদিন খাওয়া দাওয়া করেননি। তাই প্রচণ্ড দুর্বল। রফিকুল ইসলাম বলেন,” ওই রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তরিঘড়ি চিকিৎসার জন্য বর্ধমানে নিয়ে যেতে পারলে হয়তো বেঁচে যেতেন।” ভাতার হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের পরিষেবা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।

LEAVE A REPLY