নিজস্ব প্রতিনিধি,বাঁকুড়াঃ দিনের বেলায় জঙ্গলের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকলেও সন্ধ্যের অন্ধকার নামতেই জঙ্গল লাগোয়া ধানের জমিতে নেমে আসছে বুনো শুকরের দল। খেয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে দিচ্ছে বিঘের পর বিঘে জমির প্রায় পাকা ধান। হিংস্র বুনো শুকরের মুখ থেকে ফসল রক্ষা করতে নিত্যদিন রাত জাগছেন গ্রামের মানুষ। কিন্তু তাতেও রেহাই মিলছে কই? মুখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও সব জেনেশুনেও নির্বিকার বন দফতর। বাঁকুড়া জেলায় ফি বছর হানা দেয় দলমার দাঁতাল দল। সেই দাঁতাল দলের তান্ডবে যখন লোকসানের বহর বাড়ছে উত্তর বন বিভাগ ও পাঞ্চেত বন বিভাগের বিস্তীর্ণ এলাকায় তখন বাঁকুড়া দক্ষিণ বন বিভাগের বেনাজিরা এলাকায় নজিরবিহীন ভাবে শুরু হয়েছে বুনো শুকরের আক্রমণ। চলতি বছর সময়ে বর্ষা না আসায় ও যথেষ্ট বৃষ্টি না হওয়ায় সারা বাঁকুড়া জেলার পাশাপাশি অতি কষ্টে জলসেচের মাধ্যমে জমিতে আমনের চারা রোপন করেছিলেন বেনাজিরা গ্রামের মানুষ। ফলে আমন চাষের খরচ হয়েছে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশ বেশি। এখন সেই জমিগুলিতে পাকতে শুরু করেছে আমন ধান। কিন্তু বুনো শুকরের আক্রমনে পাকা ধানে মই দেওয়ার মতো অবস্থা হওয়ায় সেই ধান আর নিজের খামারে তুলে নিয়ে যেতে পারবেন কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান বেনাজিরা গ্রামের চাষীরা। বুনো শুকরের দল প্রতিদিন হানা দিচ্ছে জঙ্গল লাগোয়া ফসলের ক্ষেতগুলিতে। শুকরের হানায় ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এলাকার প্রায় ২০ বিঘে জমির ধান। অবশিষ্ট জমির ধান বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জমির আলে রাত পাহারা দিচ্ছেন গ্রামের মানুষ। কিন্তু বুনো শুকর অত্যন্ত আক্রমনাত্মক ও হিংস্র হওয়ায় খাল;ই হাতে তাদের মোকাবিলা করা যথেষ্ট কঠিন। এই অবস্থায় বুনো শুকরের হাত থেকে ফসল বাঁচানোর স্থায়ী ব্যবস্থা ও ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবী জানিয়েছেন চাষীরা। বন দফতরের দাবী ওই এলাকায় বুনো শুকরের উৎপাতের খবর তাঁদের কাছে রয়েছে। কিছু ক্ষয়ক্ষতিরও খবর আছে। বুনো শুকরদের ঠেকাতে বন কর্মীদের নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।