নিজস্ব প্রতিনিধি,বাঁকুড়া:সন্ধ্যার মুখে মাত্র কয়েকমিনিটের ঝড়। আর তাতেই কার্যত লন্ডভন্ড হল বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্ত। কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকল গোটা এলাকা। কোথাও আবার রাস্তার ধারের গাছ উপড়ে বিপর্যস্ত হল যান চলাচল। বাঁকুড়া শহরে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং উড়ে আহত হলেন মোট চার জন। ক্ষতিগ্রস্থ একাধিক বাড়ি। মে মাসের প্রথম থেকেই অসহ্য ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল হয়েছে বাঁকুড়া জেলার মানুষ। মে মাসের প্রথম দু’সপ্তাহ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও ছিল মোটামুটি ভাবে চল্লিশ ডিগ্রীর উপরে। স্বাভাবিক ভাবে সকলেই হা-পিত্যেশ করে প্রতিক্ষা করছিল কালবৈশাখীর। সোমবার বিকালে হঠাৎ ঘন কালো মেঘে ঢেকে যায় আকাশ। শুরু হয় তুমুল ঝড়। মিনিট পাঁচেক ধরে ঝড়ের তান্ডব চলার পর বৃষ্টি নামে। এই ঝড় বৃষ্টিতে তাপমাত্রা নেমে যাওয়ায় জেলার মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেলেও ঝড়ের তীব্রতায় জেলার প্রায় সর্বত্রই কমবেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সোনামুখী ব্লকের নিত্যানন্দপুর মিনি মার্কেট সংলগ্ন মাঝেরপাড়া এলাকায় ঝড়ে গাছ উল্টে পড়ে বিদুতের তারের উপর। ঝড়ে উল্টে পড়ে একটি বিদ্যুতের খুঁটিও। রাস্তার উপর বিপজ্জনক ভাবে ছিঁড়ে পড়ে বিদ্যুৎ বাহী ওভারহেড তার। এর জেরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। ঝড়ের তান্ডবে রাস্তার ধারের গাছ উপড়ে বিপত্তি ঘটে কোতুলপুর ব্লকের গোপালপুরে। ঝড়ে রাস্তার ধারের একটি প্রাচীন আমগাছ উপড়ে রাস্তার উপর পড়ে যাওয়ায় বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকে বিষ্ণুপুর আরামবাগ রাজ্য সড়কে। পরে কোতুলপুর থানার পুলিশ দ্রুততার সাথে ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাস্তার উপর উপড়ে পড়া গাছের গুঁড়ি কেটে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিলে ফের বিষ্ণুপুর আরামবাগ রাস্তায় যান চলাচল শুরু হয়। ঝড়ের তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় বাঁকুড়া শহরও। সোমবার ঝড় অল্পক্ষণ স্থায়ী হলেও তার গতিবেগ এতটাই ছিল যে বাঁকুড়া শহরের কেরানীবাঁধ এলাকায় লোহার কাঠামো সহ উপড়ে পড়ে একটি বাড়ির ছাদে লাগানো বিজ্ঞাপনের বিশাল হোর্ডিং। হোর্ডিং এর ওই কাঠামো পার্শ্ববর্তী দুটি বাড়িতে গিয়ে পড়ায় বাড়ি দুটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ঘটনায় আহত হন চারজন স্থানীয় বাসিন্দা। আহতদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও সোমবার সন্ধ্যার ঝড়বৃষ্টির জেরে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত রাতভর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল।
