জয় লাহা, দুর্গাপুর, ৪ জানুয়ারীঃ পৃথক সাঁওতালি শিক্ষা বোর্ড, প্রতি জেলায় সাঁওতালি কলেজ, স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ, শারি ধর্ম কোর্ট বিল পাস সহ ১৫ দফা দাবীতে আদিবাসী আন্দোলনে উত্তাল রাজ্য। সারা রাজ্যের সঙ্গে দুর্গাপুর ও কাঁকসায় চাক্কা জ্যাম সড়ক অবরোধে সামিল হল আদিবাসীরা। বুধবার ১৯ নং জাতীয় সড়কের দুর্গাপুর ডিভিসি মোড়ে, পানাগড় – মোরগ্রাম সড়কের ওপর কাঁকসার ১১ মাইলে সড়ক অবরোধ করল ভারত জাকাত মাঝি পারগনা মহল সংগঠন। তা়র জেরে অবরূদ্ধ হয়ে পড়ে দক্ষিনবঙ্গের দুই গুরুত্বপুর্ন সড়ক। যানজটে আটকে পড়ে যাত্রীবাহি বাস থেকে সমস্ত রকম যান। আদিবাসীদের অবরোধের জেরে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারন মানুষ। বুধবার সকাল সাড়ে নটা থেকে কাঁকসার ১১ মাইল মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের কর্মী সমর্থকরা। রাস্তার ওপর সিধু-কানহুর ছবি বসিয়ে পূজার্চনা শুরু করে। রাস্তার ওপর তীরধনূক নিয়ে বসে পড়ে আদিবাসী পরিবারের লোকজন। বিস্তীর্ন কাঁকসা, আউশগ্রাম জঙ্গলমহলের কয়েক’শ লোক জমায়েত হয় সেখানে। সংগঠনের পক্ষে জয়দেব মুর্ম্মু, ভরত হেমব্রম, সঞ্জয় হেমব্রম প্রমুখ জানান,” সাঁওতালি ভাষায় পৃথক শিক্ষা বোর্ড গঠন করতে হবে। রাজ্যের সব স্কুলে সাঁওতালি ভাষায় স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। প্রতি জেলায় সাঁওতালি ভাষায় কলেজ তৈরী করতে হবে। এস-এটি দের জাল শংসাপত্র প্রদানে আরও কঠোর হাতে দমন করতে হবে।” অবরোধকারী কর্মীরা আরও বলেন,” শারি ধর্ম কোট বিল ২০০৩ সাল থেকে লিপিবদ্ধ হয়ে পড়ে আছে। ওই বিল পাস করতে হবে। ২০০৬ সালের অনধিকার আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে। সাম্প্রতিক কালে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় আদিবাসী বহু অসহায় প্রকৃত প্রাপকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। তার সঠিক মূল্যায়ন করে বাস্তবায়িত করতে হবে। পাঁচামীতে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করে কয়লাখনি করা চলবে না।” অবরোধকারীদের দাবী, আমাদের দাবী না মানলে আগামীদিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে।” এদিন অবরোধের জেরে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিনবঙ্গের যোগাযোগের গুরত্বপূর্ণ ওই সড়ক অচল হয়ে পড়ে। আটকে পড়ে সমস্তরকম যাত্রীবাহি বাস ও অন্যান্য গাড়ী। একইরকমভাবে বেলা গড়াতেই ১৯ নং জাতীয় সড়কের ওপর দুর্গাপুর ডিভিসি মোড়ে অবরোধ করে আদিবাসীরা। ফলে ওই দুই গুরুত্বপুর্ন সড়কে অবরোধের যেরে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। যাত্রীবাহী বাস রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে পড়ার ফলে সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। চরম দুর্ভেগ ও ভোগান্তির শিকার হয় সাধারন মানুষ।আদিবাসীদের অবরোধের জেরে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। হয়রানির শিকার হওয়া মানুষের দাবি,” রাস্তা অবরোধ করে কোনো আন্দোলন সফল হয় না।” তবে অগত্যা অনেকেই পায়ে হেঁটে নিজেদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।