বিশেষ প্রতিনিধি,দুর্গাপুরঃ কারখানায় উৎপাদন জারি থাকলেও সঠিক সময়ে কর্মীদের বেতন দেওয়া হয় না। পিএফের টাকা কাটা হলেও কোনও হিসেব পাওয়া যায় না। ইএসআইয়ের সুবিধা পর্যন্ত থাকে না। দুর্গাপুরের বেসরকারি কারখানার শ্রমিক মহলে কান পাতলে এমন অনেক অভিযোগ শোনা যায়। জেলা তথা রাজ্যের শ্রমিক নেতারা এই ব্যপারে ওয়াকিবহাল আছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করার পরেও ছবিটা খুব একটা বদলানো যায় নি। কিন্তু এবার একেবারে উলটো ছবি দেখা গেল রাতুরিয়া – অঙ্গপুর শিল্পতালুকে বেসরকারি শ্যাম ফেরো অ্যালয় কারখানায়। গত ১১ জুলাই বেলার দিকে কারখানার এআরসি ফার্নেসে ভয়াবহ আগুন লাগে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে কয়েক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে কেউ আহত না হলেও কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে যায়। সংস্থার ফ্যাক্টরি ম্যানেজার সরোজ কুমার হাজরা বলেন, ‘মেশিন, ইলেট্রিক্যাল যন্ত্র, ফার্নেস ও ফার্নেসের পরিকাঠামো, ট্রান্সফরমার সহ আনুষঙ্গিক অনেক যন্ত্রাংশ আগুনে নষ্ট হয়ে যায়। মেরামত করে ফার্নেস চালু করার পর পুনরায় উৎপাদন শুরু করতে কয়েক মাস সময় লাগবে।’ অগ্নিকান্ডের পর এই ইউনিটে কর্মরত শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাদের আশঙ্কা ছিল ফার্নেস মেরামত করে পুনরায় উৎপাদন শুরু না হওয়া পর্যন্ত তাদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হবে। বেতন দেওয়া হবে না। শ্রমিকদের আশঙ্কার কথা জানার পর ম্যানেজমেন্টের তরফে ঘোষণা করা হয় কোনও শ্রমিকের বেতন বন্ধ হবে না। সংস্থা এইচআর ম্যানেজার রাজেশ সিং শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমকে জানান ‘আমরা কোনও কর্মীর বেতন বন্ধ করছি না। প্রত্যেকে সঠিক সময়ে বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাবেন। আমাদের অন্য একটি ইউনিট চালু আছে সেখানে কাজ করবেন আগুনে নষ্ট হয়ে যাওয়া ইউনিটের কর্মীরা।’ প্রায় তিন হাজার কর্মী কাজ করেন শ্যাম ফেরো অ্যালয় কারখানায়। উৎপাদিত ফেরো অ্যালয় দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন স্টিল প্লান্টে রপ্তানি করা হয়। সংস্থার দুই কর্মী অসীম দাস ও কঙ্কন বরকন্দাজ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই কারখানায় কাজ করছি। কখনও বেতন ও অন্য সুযোগ সুবিধা নিয়ে সমস্যা হয় নি। আগুনে প্রচুর ক্ষতি হলেও ম্যানেজমেন্ট সঠিক সময়ে বেতন দেবেন বলেছেন।’