বিয়ের আসরে কনে শ্লোগান দিয়ে উঠলেন – ‘নিয়োগ চাই,নিয়োগ চাই’

0
53

নিজস্ব প্রতিনিধি,বর্ধমানঃ জীবনের এক রোমান্টিক মুহুর্তেও নিজের অধিকার আদায়ের আন্দোলন ছাড়েন নি তিনি। বিয়ের মণ্ডপ থেকে গলা ছেড়ে শ্লোগান দিলেন তিনি। গলা মেলালেন সহযোদ্ধারা। এ এক অন্য রকম ছবি। বিয়ে বাড়িতে সানাই বাজছে, নিমন্ত্রিত  লোকেদের আনাগোনা। সেই সময় কনের  সাজে অভয়া রায় তার বন্ধুদের পাশে নিয়ে হঠাৎ করেই বিয়ের আসরে শ্লোগান দিয়ে উঠলেন, ‘নিয়োগ চাই, নিয়োগ চাই, আমাদের বঞ্চনা মানছি না মানবো না, বিয়ের আসর থেকে দিচ্ছি ডাক- বঞ্চিতরা চাকরি পাক’।  এই অভাবনীয় ঘটনায় হৈচৈ পড়ে গেছে পূর্ব বর্ধমানের ছাতনী গ্রামে। কয়েকদিন আগেই ভাতারের ছাতনীর বাসিন্দা রিন্টু দের সাথে বিয়ে হয় ভাতারেরই খেড়ুরের বাসিন্দা অভয়া রায়ের। আর সেই বিয়ের আসরেই ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থী অভয়া রায় স্লোগান তোলেন ‘নিয়োগ চাই নিয়োগ চাই’। তার সাথে ছিলেন বীরভূম, উত্তর চব্বিশ পরগনা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া থেকে আসা আন্দোলনরত তার সহকর্মী বা বন্ধুরা। অভয়া রায়ের অভিযোগ, ২০১৪ সাল থেকে টেট উত্তীর্ণ হয়েও আজকে তারা বেকার। ২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রী চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিলেও সেই চাকরি এখনো পাওয়া যায়নি। অথচ অযোগ্যরা চাকরি পেয়েছে। কিন্তু যোগ্যরা আজও  রাস্তায় আন্দোলনে রয়েছে, কিন্তু তাদের চাকরি হয়নি। তিনি জানান, জীবনের এটা বিশেষ দিন। কিন্তু এই দিনেও ডিপ্রেশন ঘিরে ধরে আছে। শূন্য পাওয়ারা চাকরি করবেন আর যোগ্যরা বিলাপ করবে। তাই সহযোদ্ধাদের পাশে পেয়ে গলায় উঠে এসেছে শ্লোগান। মুখ্যমন্ত্রী তো মানবিক। তবে এটা দেখছেন না কেন? পাত্রীর মা অঞ্জলি রায় জানান, দুর্ঘটনায় বাবা মারা যাবার পর থেকে টিউশন করে, নাচ শিখিয়ে মেয়েটা লড়াই চালিয়ে গেছে। জমি বেঁচে ডি এল এড দিতে হয়েছে। মেয়েটা চেয়েছিল বিয়ের আগে চাকরি হোক। তা হয়নি। তাই হতাশায় এই পদক্ষেপ। পাত্রীর এই কাজে গ্রামবাসীরা অবাক হলেও তার লড়াই সম্ভ্রম আদায় করে নিয়েছে।

LEAVE A REPLY