বিশ্বের সবথেকে ছোট এন্টেনা তৈরী করে সাড়া ফেললেন বাঁকুড়ার বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত পাল

0
132

নিজস্ব প্রতিনিধি,বাঁকুড়াঃ বিশ্বের সবথেকে ছোট এন্টেনা তৈরী করে সাড়া ফেলে দিলেন বাঁকুড়ার বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত পাল। রাঁচির মেশরার বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যাপক শ্রীকান্ত পাল তাঁর সহযোগী মৃন্ময় চক্রবর্তীকে নিয়ে এই এন্টেনা তৈরী করেন ২০১৩ সালে। সে সময় এন্টেনার জন্য পেটেন্টের জন্য আবেদন জানানো হয়। সম্প্রতি ভারত সরকার এই এন্টেনার পেটেন্ট প্রদান করে। বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত পাল এর দাবী এই এন্টেনা ওয়ারলেস প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দিগন্ত খুলে দেবে। আজ থেকে ২৪ বছর আগে ব্লুটুথের আবিস্কার হয়েছিল। সেই ব্লুটুথ প্রযুক্তি ওয়ারলেস যোগাযোগের ক্ষেত্রে যুগান্ত ঘটিয়ে ফেলেছিল। দ্রুত জনপ্রিয় সেই প্রযুক্তির গতি বৃদ্ধির জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গবেষণাগারে নিরন্তর গবেষণা শুরু হয়। আর এসবের মাঝেই সহযোগী তৎকালীন পিএইচডি পাঠরত মৃন্ময় চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীকান্ত পাল বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষণাগারে তৈরী করে ফেলেন এমন এক এন্টেনা যা শুধু আকারে বিশ্বের ক্ষুদ্রতম তাই নয় ব্লুটুথের থেকে কমপক্ষে একশো গূন বেশি গতি সম্পন্ন। বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত পাল জানিয়েছেন নতুন এই এন্টেনার ফ্রিকোয়েন্সি ক্ষমতা ১.৮ গিগাহার্জ থেকে ১৮ গিগাহার্জ পর্যন্ত। এই এন্টেনা তথ্য আদানপ্রদানের জন্য ১০ অনুপাত ১ ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে। আকার ছোট হওয়ায় অনায়াসেই এই এন্টেনা সং যুক্ত করা যাবে মোবাইল ফোন বা যে কোনো স্মার্ট যন্ত্রে। একশো মিটার এলাকার মধ্যে দুটি বা তার বেশি এই এন্টেনা যুক্ত যন্ত্র ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই চোখের নিমেষে আদানপ্রদান করতে পারবে বড় আকারের তথ্য সমৃদ্ধ ফাইল ও ফোল্ডার। বোতামের মতো দেখতে এই এন্টেনার উৎপাদন খরচও অত্যন্ত কম হবে বলে জানিয়েছেন ওই গবেষক। এন্টেনাটির পেটেন্ট পাওয়ার পর বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার তরফে বানিজ্যিক ভাবে এন্টেনাটি উৎপাদনের প্রস্তাব ইতিমধ্যেই এসেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত পাল। ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী হিসাবেই পরিচিত শ্রীকান্ত পাল তাঁর এই আবিস্কার জাতির উদ্যেশ্যে উৎসর্গ করতে চান। বিশ্বের ক্ষুদ্রতম এই এন্টেনা আবিস্কারের বহু আগেই আন্তর্জাতিক স্তরে বিজ্ঞানী মহলে পরিচিতি পান শ্রীকান্ত পাল। মার্কিন মুলুকে থাকা বিশ্বের বৃহত্তম টেলিস্কোপ হিসাবে পরিচিত নাসার গ্রীন ব্যান্ড টেলিস্কোপে সঙ্কেত গ্রহণ সংক্রান্ত দীর্ঘকালীন একটি সমস্যার স্থায়ী সমাধান করে নজর কাড়েন শ্রীকান্ত। পরবর্তীতে ব্রিটেনের জড্রেল ব্যাঙ্ক মানমন্দিরে থাকা টেলিস্কোপের জটিল যান্ত্রিক রোগ সারান ওই বিজ্ঞানী।বাঁকুড়া জেলা স্কুলে মাধ্যমিক,খ্রিষ্টান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক,ওয়ারেঙ্গেল আর ই কলেজ থেকে ইলেকট্রনিক ও কমিউনিকেশনে বি টেক,যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম টেক,অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ও বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট ডক্টরেট করেন। জীবনের গোড়াতে ভারত ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেডের চাকরী দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও বিভিন্ন সময়ে দিল্লী ও রুড়কি আইআইটিতে অধ্যাপনার কাজ করেছেন শ্রীকান্ত পাল।

LEAVE A REPLY