অযোধ্যা পাহাড়ে জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিভিন্ন দাবিতে অস্থায়ী কর্মীদের ধর্না

0
45

সাথী প্রামানিক, পুরুলিয়া, ২৪ এপ্রিলঃ নায্য বেতন থেকে বঞ্চিত, নেই পিএফ, ইন্সুরেন্স, মেডিক্যাল। এই সমস্ত সুবিধার দাবি জানিয়ে এবং শোষণ ও বঞ্চনার অভিযোগ তুলে বাঘমুন্ডি ব্লকের পিপিএসপি অফিস চত্বরে অবস্থান ধর্নায় বসলেন ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অস্থায়ী চুক্তভিত্তিক কর্মীরা। বাঘমুন্ডির অযোধ্যা পাহাড়ে অবস্থিত পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজ প্রকল্প (পি পি এস পি) অফিস চত্বরে বিভিন্ন দাবি-দাবাকে সামনে রেখে অস্থায়ী কর্মচারীরা আজ সকাল থেকে ধর্নায় বসেন।  আজ থেকে তিনদিন ধরে অবস্থান বিক্ষোভ চলবে। কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া অস্থায়ী কর্মচারীরা পিপিএসপিতে বিভিন্ন ঠিকা সংস্থার অন্তর্গত ইলেকট্রিক্যাল মেনটেনেন্স সহ সুপারভাইজার, ড্রাইভার এবং আরো বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত অস্থায়ী কর্মচারী। জানা গিয়েছে, মোট ১৯৩ জন চুক্তিভিত্তিক কর্মী রয়েছেন। এঁদের মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ৪৯ জন, চৌকিদার পদে ৮৩, সাফাই কর্মী ১৭, মালি ৬, চালক ১৪, পাওয়ার হাউস রক্ষণাবেক্ষণে ১২ এবং রাঁধুনি হিসেবে ১২ জন রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দীপক কুমার, গিরিধারী কুমার, দুলাল চন্দ্র কুমার, গৌতম চ্যাটার্জি  জানান,  দীর্ঘদিন থেকে তাঁরা ন্যায্য পাওনা পাচ্ছেন না। এই সমস্যার কথা কন্ট্রাক্টর, শ্রম আধিকারিক পিপিএসপি আধিকারিকের কাছে বারবার জানালেও কোন সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। তাই তাঁরা  আজ থেকে  ২৬ এপ্রিল বুধবার পর্যন্ত ধরনা মঞ্চে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন।  এতে দাবি পূরণ না হলে ২৭ এপ্রিল থেকে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। এদিকে এই অস্থায়ী কর্মীরা এক সঙ্গে ধর্নায় না বসে ৫০ জন করে পর্যায়ক্রমে বসছেন এবং বিক্ষোভ দেখান। পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজ প্রকল্প সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোনও প্রভাব পড়ে নি। পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র হল পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি পুরুলিয়ার অযোধ্য পাহাড়-এ গড়ে উঠেছে। এটি দেশের প্রথম পাম্প স্টোরেজ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পশ্চিমবঙ্গ তথা পূর্ব ভারত -এর মধ্যে বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর উৎপাদন ক্ষমতা ৯০০ মেগাওয়াট। পাম্প স্টোরেজ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রে পাহাড়ের গায়ে উপরে ও নীচে দু’টি জলাধার গড়ে তোলা হয়। দিনের যে-সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে, তখন নীচের জলাধার থেকে পাম্প করে জল তোলা হয় উপরের জলাধারে। যখন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে, তখন উপরের জমা জল নীচের জলাধারে ফেলে টার্বাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। এর ফলে গ্রীষ্মে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির উপরে চাপ কমে। বিদ্যুৎ-মাসুলও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকে। আজ থেকে ১৯৩ জন অস্থায়ী কর্মীর আন্দোলন শুরু হল। তিন দিন পর যদি তাঁরা কর্ম বিরতিতে যান তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

LEAVE A REPLY